নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানী ঢাকার লালবাগে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ‘গডমাদার’ ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির জনপ্রিয় নেতা মরহুম নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর সহধর্মিণী নাসিমা আক্তার কল্পনা। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা আমিনুল ইসলাম আমিন এবং বদিউল আলম সুইটকে সাথে নিয়ে তিনি এই গ্যাং তৈরি করেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ—নাসিমা আক্তার কল্পনা দীর্ঘদিন ধরে দলের রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন এবং অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখেননি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পিন্টুর মৃত্যুর পর তিনি পুনরায় বিবাহ করেন এবং বড় ছেলের সঙ্গে কানাডায় বসবাস শুরু করেন।
৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর হঠাৎ করেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন এবং প্রয়াত স্বামীর নাম ও রাজনৈতিক অবস্থানকে পুঁজি করে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কিছু মাদকাসক্ত ও বহিরাগত ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে লালবাগ এলাকায় চাঁদাবাজি ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন ।
তার অন্যতম সহযোগী আমিনুল ইসলাম আমিন—নয়াপল্টন এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি এবং মাদক ও চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সভাপতি ছিলেন, তবে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি আজিমপুর কবরস্থান এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন। এ ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। জামিনে মুক্ত হলেও তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলমান। এছাড়া, ডিশ ব্যবসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে জনগণের কাছে গণধোলাইয়ের শিকার হন তিনি।
অন্যদিকে, বদিউল আলম সুইট দুই দফা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের সঙ্গে আঁতাত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন এবং বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের পরাজিত করেন। গণঅভ্যুত্থানের পর আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগ এবং প্রতিদিন রাত ৮টার পর আজিমপুর ২৭ নম্বর কলোনীতে মাদকসেবী ও ইমন গ্রুপের সদস্য সালাহউদ্দিনসহ বহিরাগতদের নিয়ে মাদকের আড্ডা বসানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, কল্পনা কর্তৃক আমিন-সুইটের সন্ত্রাসী তৎপরতার অবসান হওয়া উচিত। তারা বহিরাগত, হঠাৎ উদয় হওয়া প্রার্থী নয়, বরং দলের প্রতি নিবেদিত, ত্যাগী ও জনসমর্থনপুষ্ট নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, নাসিরউদ্দিন পিন্টুর ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম মনিও একই আসন থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। তাদের পারিবারিক সূত্রে দাবি করা হচ্ছে কল্পনা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা পুরো লালবাগ এলাকায় সন্ত্রাসী রাজত্ব চালাচ্ছেন এবং পিন্টুর রাজনৈতিক অবস্থানকে পুঁজি করে নিজ শশুরবাড়ির আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
আরেকটি সুত্র জানায়, আমিন দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু পরিচয়ে দলে ফেরার চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে চলেছেন, যা দলীয় রীতির খেলাফ ।
স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, আমিন ও সুইটের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। যদিও আমিন ও সুইটের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তারা নিজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি। অন্যদিকে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরেও তিনি কীভাবে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন—এই বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
8gryd3
https://shorturl.fm/VV0fx
https://shorturl.fm/3VHmD
0b55ic
https://shorturl.fm/g3NqA
hiyvp3
https://shorturl.fm/kCFn1